নববর্ষ
-রাণা চ্যাটার্জী
ওরে তোরা ওঠবি কখন!আজ নববর্ষ! বাবার ডাকে তড়াক করে উঠে ঘুম জড়ানো বাসিমুখে দুইভাই বোন পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানালো ।স্নান সেরে ঠাকুর প্রণাম সেরে বাবা মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে রুমকি বললো,বাবা তুমি ভাইকে নিয়ে লক্ষীশ্রী, রায় ক্লথ যেও।আমি মায়ের সঙ্গে সন্ধ্যায় শ্রী বস্ত্রালয় যাবো হালখাতা করতে।
আনন্দে লাফিয়ে ভাই বলল নবদূর্গা, স্বর্ণ জুয়েলার্সও যাবো তো।আরে তাই তো,রূপক তোর যে পোয়া বারো বলে সবাই হেসে উঠলো।
এবছর সাতটা দোকান থেকে হালখাতার নিমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছসিত রূপক। শুধুই অপেক্ষার দিন গুনছিল ।নববর্ষ মানেই অদ্ভুত একটা আনন্দ আকাশে বাতাসে। সবে শেষ হাওয়া চৈত্র সেলে খান তিনেক নতুন জামা হয়েছে তার। সকাল থেকে প্রভাত ফেরি আয়োজন,রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাদকতা মেখে ছোট বড়ো সবাই মন্দির,রাস্তায় নেমেছে।
দিদি তুই তো গত বছর রায় ক্লথ যাস নি,কোল্ড ড্রিংকস,এত বড় প্যাকেট আর জানিস একটা চাবির রিং উপহার দিয়েছিল।জানি তো ভাই,ওই জন্যই তো তোকে পাঠাচ্ছি।এসে বলিস কিন্তু কি কি হলো।
ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেলো রুমকির।মা বলে হেঁকে ফেলেছিল ভুলে। এ কি এতক্ষণ কি তবে সে স্বপ্নে পৌঁছে গেছিলো শৈশবের হালখাতা,নববর্ষ উৎসবে।!মা বাবা আজ কেউ বেঁচে নেই,ভাই স্কটল্যান্ডে সেটল।চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো রুমকির।আয়নায় নিজেকেই শুভ নববর্ষ শুভেচ্ছা জানিয়ে সংসারের কাজে মন দিলো।